𝔍 ন'বছর আগে মহারাষ্ট্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর অশ্বিনী বিদরেকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল - রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত, প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক তথা অশ্বিনীরই তৎকালীন প্রেমিক অভয় শ্য়ামসুন্দর কুরুন্দকরের! সোমবার (২১ এপ্রিল, ২০২৫) মহারাষ্ট্রের পনভেল দায়রা আদালত ৪১০ পৃষ্ঠার রায়ে এই সাজা ঘোষণা করেছে।
💖ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, আজ থেকে প্রায় ন'বছর আগে (২০১৬ সালের ঘটনা) মহারাষ্ট্রের থানেতে কর্মরত ছিল অভয় কুরুন্দকর। সেই সময়েই সে অশ্বিনীকে অপহরণ করে খুন করে এবং তাঁর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে ভাসাই খাঁড়িতে ফেলে দেয়! সেই সময় অশ্বিনীর সঙ্গে অভয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল! এই ঘটনা যখন ঘটে, সেই সময় অশ্বিনী নবি মুম্বইয়ে কর্মরত ছিলেন।
🔯জানা গিয়েছে, প্রায় ন'বছর আগে নির্যাতিতা যখন নিখোঁজ হন, তখন প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়ার পরও তদন্তে 'ইচ্ছাকৃত গাফিলতি' করা হয় বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। সোমবার আদালত নবি মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে তিনি পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা সেই অভিযোগও খতিয়ে দেখেন। পাশাপাশি, খুনের তদন্তেও গাফিলতি হয়েছিল কিনা, পুলিশ কমিশনারকে তাও পুনরায় তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
🐎সংশ্লিষ্ট খুনের ঘটনায় অভয়ের দুই সঙ্গী - কুন্দন ভাণ্ডারী ও মহেশ ফলনিকরকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই দু'জনই নিহত অশ্বিনীর দেহ লোপাট করতে অভয়কে সাহায্য করেছিল। কিন্তু, হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আদালত তাদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে।
♛অতিরিক্ত দায়রা বিচারক কে জি পলদেওয়ার সোমবার এই মামলাটিকে সরকার পক্ষ, অভিযুক্ত পক্ষ এবং বিচার বিভাগের জন্য একটি 'কঠিন কাজ' হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আদালত এই অপরাধের নৃশংস প্রকৃতির কথা স্বীকার করলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসারে একে 'বিরলের মধ্যে বিরলতম' ঘটনা বলে উল্লেখ করেননি। তাই, এই মামলায় দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।
𒊎আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, প্রসিকিউশন প্রমাণ করেছে যে দোষী ব্যক্তি একজন প্রাক্তন সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর। সে নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করেছিল এবং অপরাধটি ঘটিয়েছিল।
💙ন'বছরের পুরোনো এই মামলায় গত ১১ এপ্রিল (২০২৫) ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয় অভয় কুরুন্দকর। একইসঙ্গে, তার দুই সহযোগীকে ও অভয়কেও প্রমাণ লোপাটের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং প্রমাণ লোপাটের দোষে তিনজনকেই সাত বছর করে সশ্রম কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়। অভয়ের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবনের সঙ্গেই এই সাতবছরের কারাদণ্ড একসঙ্গে চলবে। প্রসঙ্গত, এই মামলায় ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর অভয়কে গ্রেফতার করা হয়। তারপর থেকে দীর্ঘদিন সে জেল হেফাজতে থেকেছে।
🥀লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ওই একই বছর (২০১৭) সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতি পদক প্রদান করা হয়েছিল অভয় কুরুন্দকরকে! যা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারক। কীভাবে অভয় কুরুন্দকর ওই পদক পাওয়ার জন্য মনোনীত হলেন, কে তাঁর নাম সুপারিশ করেছিলেন, তাও তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।