'দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তির জন্যে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা অত্যাবশ্যক' বলে মন্তব্য করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের আগে বাংলাদেশ নিয়ে নাকি একটি 'ব্যাকগ্রাউন্ড নোট' তৈরি করেছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এমনই দাবি করেছে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪। সেই রিপোর্টে বলা হয়, ভারতের সীমান্তের নিরাপত্তার খাতিরে বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক পারস্পরিক সম্পর্ক প্রয়োজন। বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে নাকি স্ট্যান্ডিং কমিটিকে আরও বলা হয়, 'ভারতের নিরাপত্তার দিকগুলিকে সুনিশ্চিত করতে আমরা সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছি। কৌশলগত বিষয়গুলি নিয়ে আমাদের উদ্বেগের বিষয়ে যাতে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে অভিহিত করতে পারি, সেই রাস্তা খোলা আছে।' (আরও পড়ুন: ൲'হিন্দুদের ওপর ১০টি হামলা…', জয়শংকরের তোপের জবাব পাকিস্তানের, দিল অযাচিত জ্ঞান)
𝕴এদিকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বলতে গিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়, ঢাকা ক্রমাগত ইসলামি কট্টরপন্থীদের জেল থেকে রেহাই দিচ্ছে। মুক্তি পাওয়া এই সব কট্টরপন্থীরা সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এই বিষয়টিকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক 'গভীর উদ্বেগের' বিষয় বলে উল্লেখ করেছে। এর জেরে শুধুমাত্র বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে বিঘ্নিত হবে তা নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও বিশ্বের শান্তি প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
♓এদিকে বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকেও নজর রেখেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এই বিষয়ে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিকে তারা জানিয়েছে, 'বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হতে পারে। বিএনপি, জামাতে ইসলামি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি এর প্রস্তুতি নিতে শুরু কে দিয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে সংস্কারের সময়সীমার বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলি আগাম নির্বাচনের জন্যে ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছে সরকারের ওপর।' এদিকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
♕এই সবের মাঝেই বাংলাদেশি সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্যও নাকি তুলে ধরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিভেদের বিষয়টি তুলে ধরতে জেনারেল ওয়াকারের বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গিয়ে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন জেনারেল ওয়াকার। কারও নাম না নিয়েই তিনি বলেছিলেন, 'এনাফ ইস এনাফ' (যথেষ্ঠ হয়েছে)। এরপর থেকেই বাংলাদেশেও সেনা প্রধআনের সেই বক্তব্য ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছিল।
﷽এদিকে এরই সঙ্গে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক হিংসার বিষয়টিও তুলে ধরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। রাজনৈতিক শূন্যতার কারণেই ধর্মীয় কট্টরপন্থীরা বাংলাদশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে মত প্রকাশ করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বাংলাদেশে 'ইসলামি খলিফত' স্থাপনের দাবির বিষয়টি তুলে ধরা হয় সংসদীয় কমিটির সামনে। বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ৪ অগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ২১৮৪টি হামলা হয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপরে।