বয়স আশির দোরগোড়ায়। মাথার সব চুলই পেকে ধবধবে সাদা। কিন্তু এই চুলের ভীষণ যত্ন নিতে ভালোবাসেন ট্রাম্প। কিন্তু ভালোবাসায় যে ব্যাঘাত ঘ𝓀টাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জলের নীতি। এবার ক্ষমতায় সেই নিয়মনীতিকেই দিলেন ঘ্যাচাং ফুঃ করে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক বিশ্ব তোলপাড় করা সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন ট্রাম্প। এমনতরো বোম ফাটাতে বরাবর বেশ অভ্যস্ত ট্রাম্প। এবার জলনীতি নিয়েও স্পেশাল বোম ফাটিয়েই দিলেন। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন শাওয়ার হেড নীতিতে বদল এনেছেন। আগে দেখে নেওয়া যা🐲ক, কী এই নীতি।
শাওয়ার হেড নীতি
শাওয়ার হেড বলা হয় একটি শাওয়ারের মুখের গোলাকার অংশটিকে। স্নানের ক্ষেত্রে এই শাওয়ার হেড মাথার উপর থাকে। অথবা হ্যান্ড শাওয়ার হলে হাতে। টয়লেট, রান্না ঘরের সিঙ্কেও এমন শাওয়ার হেড থাকে যেটি জল পড়ার হার নিয়ন্ত্রণ করে। এই শাওয়ার হেড নিয়েই বিশেষ নীতি নির্ধারণ করেছ♛িলেন বারাক ওবামা। শাওয়ার হেডের আকার ও তার ছিদ্রের আকার ইত্যাদি সর্বাধিক কেমন হতে পারে, তা ঠিক করে দিয়েছিল ওবামার প্রশাসন। আপাতভাবে তুঘলকি সিদ্ধান্ত মনে হচ্ছে তাই না? আসলে জলের অপচয় রোধ করতেই এই বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ওবামার পর ট্রাম্প ও ট্রাম্পের পর যখন বাইডেন ক্ষমতায় এলেন, তখনও এই নিয়মে বদল হয়নি। কিন্তু এবার আর থাকতে পারলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর কাঁহাতক চুলের অযত্ন করা যায়! গত বুধবার তাই নিয়মটার ‘বারোটা বাজিয়েই’ দিলেন শেষমেশ।
আরও পড়ুন - সিগারেটের মর্ডান ভার্শনে🅠 বিপদ আরও বেশি? কী হতে পারে ই-সিগারেট খেলে? জানুন
আমেরিকান ফার্স্ট নীতি
শুধু চুলের যত্ন নেওয়াই কি এই নিয়মকে ডাস্টবিনে ফেলার উদ্দেশ্য? তেমনটা হয়তো নয়। বরং অনেকে মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘আমেরিকান ফার্স্ট নীতি’ এবা𒉰র জলের উপরেও বর্তাল। কোন দেশ কত জল খরচ করবে, তা নিয়ে অন্যদের খবরদারি আর মানবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চুল ভালো রাখার অছিলায় এই পদক্ষেপ♚ যেন তারই ইঙ্গিত। ইঙ্গিত কারণ ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায় দোস্ত’।
বিশ্বের নিরিখে মার্কিনিরা কোথায় দাঁড়িয়ে
জলের ব্যবহারে আমেরিকানরা কি সেকেন্ড? কী বলছে পরিসংখ্যান? রাষ্ট্রসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের (FAO) আ্যাকোয়াস্ট্যাট ▨বিভাগ গোটা বিশ্বের প্রতিটি দেশ বছরে কতটা জল ব্যবহার করে, তার হিসেব রাখে। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে মাথা পিছু ১৩১৮ কিউবিক মিটার জল খরচ হয়ে🧸ছে। এক কিউবিক মিটার মানে ১ হাজার লিটার জল। অর্থাৎ সারা বছরে মোট খরচ হয়েছে ১৩ লাখ ১৮ হাজার লিটার জল। মাথা পিছু জল খরচের নিরিখে ওই বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান ছিল চতুর্থ স্থানে। প্রথম তিন স্থানে ছিল তুর্কমেনিস্তান, গুয়ানা ও চিলি। কিন্তু জনসংখ্যার নিরিখে এদের কয়েকশো গুণ বেশি মানুষ বাস করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়ার্ল্ডমিটারের পরিসংখ্যান মাফিক, বর্তমানে উত্তর আমেরিকার এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন বা ৩৫০ কোটির কাছাকাছি। এর থেকেই স্পষ্ট বছরে কত গ্যালন গ্যালন জল খরচ করেন মার্কিনিরা।
আরও পড়ুন - সামান্য ফোঁড়া বা আঁচিলও কখনও কখনও ত্বকের ক্যানসা♓রের উপসর্গ হয়! কীভাবে বুঝবেন?
আর যা বলছে পরিসংখ্যান
জল যে শুধু ঘরোয়া কাজে দরকার হয়, তা তো নয়। চাষাবাদ, বিভিন্ন কলকারখানা ও নানাবিধ কাজে জলের প্রয়োজন পড়ে। এই জলের হিসেব ধরলে চোখ কপালে তুলবে পরিসংখ্যান। আরেক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি জল ব্যবহার করে প্রত🍌ি বছর, তার প্রথম দশের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান। চিনের পরেই দেখা যাচ্ছে এই দেশ। আবার কোনও কোনও ওয়েবসাইট বলছে, সযুক্ত আরব আমিরশাহি ও চিন প্রথমে। তার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এর পরেও প্রশ্ন থেকে যায়, কলের মুখ বেশি খুলে দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি তালিকায় পিছিয়ে যাবে? না পেরিয়ে যাবে অন্য দেশকে (দেশগুলিকে)? ব𓃲ড় বড় দেশের অতিরিক্ত চাহিদা আর চাহিদা-যুদ্ধ পেরিয়ে যাবে না তো প্রকৃতির সহ্যসীমা?
কেন ভাবাচ্ছে ট্রাম্পের ‘চুলের যত্ন’
জল নিয়েই সিদ্ধান্ত আপাত দৃষ্টিতে নগণ্য মনে হলেও এর অভিঘাত কতটা প্রবল হতে পারে, ꧋তা বলে দেয় ট্রাম্পের অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলি। ক্ষমতা দখলের পর পরই ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিয়েছ൩েন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্যারিস চুক্তি থেকে তুলে নেওয়ার। ২০১৫ সালে ১৯৬টি দেশের মধ্যে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষার কিছু লক্ষ্য তথা অঙ্গীকার নিয়ে। সেই চুক্তি থেকে দেশের নাম সরিয়ে নেওয়া একভাবে দেশকে কিছুটা ‘দায়ভার’ মুক্ত করাও বটে। কিন্তু কীসের দায়? জলবায়ু রক্ষার দায়? পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কি সেই দায় নেই?
কোন পথে হাঁটছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
অনেকেই বলতে পারেন, প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা মানেই পরিবেশের প্রতি দায় অস্বীকার করা নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক আরেক সিদ্ধান♋্তও একটু খতিয়ে দেখা যাক। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী,🐷 গত মার্চের একটি নির্দেশে ট্রাম্প দেশের ১১৩ মিলিয়ন হেক্টর জমির সমস্ত গাছ কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ ১১ কোটি ৩০ লাখ হেক্টর জমির সব গাছ উধাও হয়ে যাবে একটি সইয়ে। ট্রাম্পের কথায়, ‘ইমিডিয়েটলি’ এটি করা দরকার। কারণ? মার্কিন অর্থনীতি ও নগরসভ্যতার উন্নয়ন!