গত কয়েকদিন ধরেই নেপালে হিন্দু রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি উঠেছে। এই আবহে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যালয়ে রাজতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের হামলায় অন্তত দু'জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী কাঠমান্ডুতে কার্ফু জারি করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করেছে সরকার। তবে এই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠছে এবং রাজতন্ত্রের সমর্থক সংগঠনগুলো সরকারকে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে। তারা নেপালে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার দাবি করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, দেশে হঠাৎ কেন এমন দাবি উঠছে? নেপাল সরকারের সন্দেহ, এ ঘটনার নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন দেশটির প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ। এই আবহে জ্ঞানেন্দ্রকে জরিমানা করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: ☂বড় পদক্ষেপ মায়ানমারের বিদ্রোহীদের, অপারেশন ব্রহ্মার জন্যে প্রস্তুত ভারতীয় সেনা)
আরও পড়ুন: 💮'বাংলাদেশি সেনা প্রধানের বলেন...', প্রতিবেশী দেশ নিয়ে বড় দাবি ভারতের
সূত্রের খবর, হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার সন্দেহে নেপালের প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে নেপাল সরকার। নেপাল সমাচারের মতে, কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে এই বিক্ষোভের পিছনে জ্ঞানেন্দ্র রয়েছেন। তাঁকে জরিমানাও করা হয়েছে। শনিবার কাঠমান্ডুর পুরসভার মেয়র বলেন্দ্র শাহ চিঠি লিখে জরিমানা আরোপ করেছেন জ্ঞানেন্দ্র শাহের ওপর। চিঠিতে তাঁকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ লক্ষ ৯৩ হাজার নেপালি টাকা দিতে বলা হয়েছে। (আরও পড়ুন: ꦜ'হিন্দুদের ওপর ১০টি হামলা…', জয়শংকরের তোপের জবাব পাকিস্তানের, দিল অযাচিত জ্ঞান)
আরও পড়ুন: ꦦতিন বন্ধুর সমকামী সম্পর্কে বাধা, স্ত্রীকে খুন স্বামীর, সাহায্য দুই পার্টনারের
🦹এদিকে নেপালের সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে সেনা নামানো হয়েছে। উল্লেখ্য, সংসদীয় ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ২০০৮ সালে নেপালে ২৪০ বছরের রাজতন্ত্রে ইতি টানা হয়েছিল। যদিও মাঝেমধ্যেই রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি তোলেন অনেকেই। এই আবহে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নেপালের গণতান্ত্রিক দিবসে প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের ভিডিয়ো বার্তার পরে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে হিন্দু রাজতন্ত্রের দাবি। ২৮ মার্চ পূর্ব কাঠমান্ডুর তিনকুনে এলাকায় মিছিল করেন হাজার-হাজার মানুষ। হাতে রাজা জ্ঞানেন্দ্রর ছবি এবং নেপালের জাতীয় পতাকা নিয়ে ‘দেশকে বাঁচাতে রাজা ফিরে আসুন’, ‘দুর্নীতিবাজ সরকারের পতন হোক’, ‘আমরা রাজতন্ত্র ফেরত চাই’ স্লোগান তুলতে থাকেন তাঁরা।
🤪বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতের বাইরে বেরিয়ে যায় পরিস্থিতি। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। ছোড়া হয় পাথর। বাড়ি জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। আটটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। বানেশ্বরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে। সুপারমার্কেটে লুটপাঠ চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিমানবন্দর, গৌশালা, বানেশ্বর চক, তিনকুনে, কোটেশ্বর-সহ বিভিন্ন এলাকায় কার্ফু জারি করা হয়।