ꩲ ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেই গত ১১ মার্চ একটি বৈঠক হয়েছিল। যা নিয়ে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এই বিতর্কের আবহে ফের একটি বৈঠক হল ক্যান্টনমেন্টে। তাতে বাংলাদেশ সেনার প্রায় সব জিওসি উপস্থিত ছিলেন সশরীরে বা ভার্চুয়ালি। ছিলেন নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনার প্রধানরাও। এমনই দাবি করা হয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে। সেই বৈঠকেই একাধিক সেনা কর্তা দাবি তোলেন, বাংলাদেশি ছাত্র নেতারা যে সব করে যাচ্ছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউনুসের সরকারের যে সেই অর্থে কোনও 'ফেসভ্যালু' নেই, তাও কার্যত স্পষ্ট। এই আবহে সেনা চটজলদি নির্বাচন করানোর পথে হাঁটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
🌃এদিকে বাংলাদেশি সেনা প্রধানের সঙ্গে গত ১১ মার্চের বৈঠকে কী ঘটেছিল? এই নিয়ে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলমের মধ্যে দেখা গিয়েছে 'দ্বিমত'। এহেন পরিস্থিতিতে ফেসবুকে দুই নেতার পোস্টে অস্বস্তি বেড়েছে নাহিদ ইসলামের নবগঠিত দলের অন্দরেই। উল্লেখ্য, সম্প্রতি হাসনাত আবদুল্লাহ সেনার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব দাবি করেন। বিভিন্ন জনসভায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করার আগে ফেসবুকে বোমা ফাটিয়েছিলেন এই নেতা। সেখানে হাসনাত নিজের পোস্টে পালটা দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান 'রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ' আনার জন্যে তাঁদের ওপর চাপ দেন। তবে সারজিস দাবি করেন, তাঁদের কোনও চাপ দেওয়া হয়নি, সেনা প্রধান নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা বলেছিলেন। এদিকে হাসনাত দাবি করেছিলেন, সেনা প্রধান নাকি কড়া ভাষায় ইংরেজিতে বেশ কিছু কথা শুনিয়েছিলেন তাঁদের। সেই বিষয়ে সারজিস আবার দাবি করেছেন, সোজাসাপ্টা ভাবে কথাগুলো বলা হলেও তাতে ধমকের সুর ছিল না। এদিকে এই ইস্যুতে সেনার তরফ থেকে বলা হয়েছে, হাসনাতের এই দাবি হাস্যকর এবং অপরিপক্ক দাবি।
▨এই সবের মাঝে আবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করেছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তাতে আসিফকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ইউনুসে আপত্তি ছিল ওয়াকারের। এর থেকে ধারণা করা হচ্ছিল, হাসনাত সরাসরি সেনার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে গদিচ্যুত করতে চাইছেন। এদিকে সারজিস আবার জানিয়ে দিয়েছেন, সেনা প্রধানকে সরানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এহেন পরিস্থিতিতে ঢাকার রাজনীতিক উত্তাপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এবং সেনা এই আবহে কী করে, বা আদৌ কিছু করে কি না, সেদিকে নজর থাকবে সবার।
𒐪এদিকে ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় এক ইফতারি পার্টি থেকে জুলাই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বড় বার্তা দিলেন বাংলাদেশি সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ঢাকায় সেনামালঞ্চে জুলাই আহতদের সম্মানে ইফতারির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, 'সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে।' ইফতারের অনুষ্ঠানে ওয়াকার বলেন, 'জুলাই আন্দোলনের আহতদের আর্থিক সহায়তা দিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। আপনারা জাতির কৃতি সন্তান। আমরা আপনাদের পাশে আছি সব সময়। আপনারা মনোবল হারাবেন না। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সেনাবাহিনী আহতদের পাশে থাকবে। তাদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করা হবে।' এদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী হাসনাত আবদুল্লাহর সম্প্রতি সেনা বিরোধী মন্তব্যের ঝড় তুলেছেন। এর মাঝে আহত জুলাই আন্দোলনকারীদের জন্যে সেনার ইফতারি অনুষ্ঠান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।